মোঃ রায়হান ইবনে রহমান
চাকরির শেষ প্রান্তে চলে এসেছি। আমার ভালোবাসার পুলিশ বাহিনী, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য বাহিনীকে ডিজিটাল করার নিমিত্তে মাননীয় আইজিপি মহোদয়-এর নেতৃত্বে পুলিশের সব ইউনিটে চলছে প্রযুক্তিনির্ভর করে গড়ে তোলা। সেই ছোঁয়া এখন সর্বত্র, ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেই পুলিশবাহিনীকে সবার আগে মেধা, ডিজিটাল জ্ঞান নির্ভর ও দক্ষ যোগ্য হিসেবে গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। বিভিন্ন ইউএন মিশনে কাজ করার সুবাদে ইউরোপ-আমেরিকার আধুনিক পুলিশি ব্যবস্থাপনায় কাজ করার সুযোগ হয়েছিল। সেই ধারণা অভিজ্ঞতা ও ডিজিটাল ব্যবস্থাপনা দেখে সেই দিন থেকে আমার মনে হতে থাকে, আমরাও কেন তাদের মতো হতে পারব না। বর্তমান আইজিপি মহোদয়-এর পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকায়ন করার প্রত্যয় আমাকে মুগ্ধ করে এবং বর্তমানে অ্যাডিশনাল আইজিপি মহোদয় প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিক তদন্ত সংস্থা হিসেবে সিআইডিকে গড়ার লক্ষ্যে ঐকান্তিক প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানানোর সঙ্গে সঙ্গে আমারও কিছু চিন্তাভাবনা সংযোজন করার জন্য আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সিআইডিকে আধুনিক তদন্ত সংস্থা হিসেবে গড়ার লক্ষ্যে আমার প্রস্তাবনা ধারাবাহিকভাবে নিম্নে বর্ণনা করা হলো…..
Eyes On Innovation:-
১) Facial Recognition Software
CID হেডকোয়ার্টারসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরে এই ধরনের সফটওয়্যার প্রতিস্থাপন করে সহজেই ক্রিমিনালদের শনাক্ত করার ব্যবস্থা করা। এ ব্যাপারে অন্যান্য উন্নত দেশের সফটওয়্যার অনুসরণ করা যেতে পারে।
২) Biometrics
ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে মানুষকে শনাক্ত করা অনেক দিন থেকে এই কার্যক্রম প্রচলিত আছে, বাংলাদেশ সি আই ডি ও অন্য পুলিশের ইউনিটগুলো এই ব্যবস্থায় ক্রিমিনাল শনাক্ত করে মামলাগুলো দ্রুত তদন্ত করে নিষ্পত্তি করছে। FBI নতুন ডাটাবেজ তৈরি করেছে Next Generation Identification (NGI) System সেখানে Criminal History থাকবে, এ বিষয়ে আরও কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে বিশেষজ্ঞের মতামতসহ নতুন নতুন উদ্ভাবন সৃষ্টি করা যেতে পারে।
৩) Voice Technology
ক্রিমিনাল শনাক্তকরণে এই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করার লক্ষ্যে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ।
৪) Robots
উন্নত দেশগুলো এখন রোবটের রোবটিক ক্যামেরা দ্বারা potential Crime Scenes নিখুঁতভাবে তৈরি করা যাবে, তাছাড়া নিখুঁতভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে জব্দ তালিকা প্রস্তুত করা সম্ভব, যা তদন্তের বিভিন্ন কাজে ব্যবহার নিশ্চিত করা যাবে।
৫) Video Doorbells
নাগরিক সমাজের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচারের মাধ্যমে এই ধরনের ডিভাইস প্রতিস্থাপন করলে, কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সিআইডি অফিসে ইনফর্মেশন যাবে। তার ফলে ক্রিমিনাল সহজে গ্রেপ্তার ও শনাক্ত করা সম্ভব হবে।
৬) Shotspotter
এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে Gunfire এর স্থান pinpointing The Exact Location Technology to Detect Gunfire And Analysts To Track The Data Instantly Reply to the Police. আমেরিকার বিভিন্ন State এই প্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে। কিলারের মুভমেন্ট শনাক্ত করাসহ তিন-চার মিনিটে Criminal আটক করা সম্ভব।
৭) Drones
Crime Scenes নিখুঁতভাবে প্রস্তুত করার জন্য ড্রোনের ব্যবহার, তদন্ত ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে বলে আমার ধারণা। অন্যান্য কাজে ব্যবহার করার জন্য বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে।
৮) বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
বাংলাদেশ সিআইডি তদন্ত কাজে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কে কিভাবে ব্যবহার করবে, সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে নতুন পথ বের করা।
৯) DNA Data Base
বাংলাদেশের সব নাগরিককে ডিএনএ ডাটাবেসের আওতায় নিয়ে আসা এবং এই কার্যক্রমে সিআইডি পুলিশকে অন্তর্ভুক্ত করা।
১০) চোখের শনাক্ত ডাটাবেস
এ ব্যাপারে এনআইডি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সিআইডির সমন্বয় করে ডাটাবেজ প্রস্তুত করা যেতে পারে।
১১) সিসি ক্যামেরা, মোবাইল এনালাইসিস ও অন্যান্য প্রযুক্তিনির্ভর ইকুপমেন্ট সম্মিলিত আধুনিক সিআইডি বাহিনীকে সুসংগঠিত করা।
বাংলাদেশ সিআইডিকে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর তদন্ত সংস্থা হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা, এদেশের জ্ঞানী, বিজ্ঞ ও প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের মতামত উপদেশ সিআইডিকে সমৃদ্ধ করবে বলে আশা করি।
লেখক : সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার
সিআইডি রাজশাহী জেলা ও মেট্রো।
0 Comments