ই-পেপার

নিউজ স্ক্রল

মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ

সিলেট শহরের বাসা থেকে সকাল আটটার পর পরই রওনা দেই। গন্তব্য মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী থানা। থানা উদ্বোধনের প্রস্তুতিমূলক কাজ পরিদর্শনের উদ্দেশ্যে এ গমন। সেদিন ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১৮ তারিখ, শনিবার। গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার-বড়লেখা সড়কধরে  এ  যাত্রা। পিছনের গাড়িতে আমার অফিসের এসপি জেদানসহ আরও দুজন সহকর্মী। সামনে প্রোটেকশনের গাড়ি। থেমে থেমে হালকা বৃষ্টি হচ্ছে। সকালের ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি ছুটে চলছে।

বিয়ানীবাজার পৌর শহরে প্রবেশের আগে একটি ছোট বুীজ পার হতেই সামনে বসা ড্রাইভার-বডিগার্ডকে হঠাৎ গাড়ি থামাতে বলি। ডানের গ্লাস দিয়ে একটি দৃশ্য দেখেই গাড়ি থামানো হয়। পুলিশের গাড়ি দেখে ছোট ছোট বাচ্চাদের হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানানোর দৃশ্য। মূল সড়কের পাশের সার্ভিস লেন দিয়ে বাচ্চাগুলো স্কুলের দিকে দল বেঁধে এগিয়ে চলছে। গাড়ি থেকে নেমে রাস্তা পার হই। স্কুলের বাচ্চারা বুঝতে পারে নাই তাদের কাছে ইউনিফর্ম পরা পুলিশ কেন যাচ্ছে। তাদেরকে জানাই, ‘তোমাদের সাথে একটা ছবি তুলবো।’

তাতে সবাই রাজি হয়। গোলাপী আর নেভী-ব্লু রঙের মিশ্রণে তাদের ইউনিফর্ম। পুলিশের ইউনিফর্মের সাথে অর্ধেক মিল।

গত দেড় বছর হলো এ বাচ্চারা ঘরবন্দী। করোনার কারণে তাদের এ বন্দীদশা। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়েছে। তারা বন্দী অবস্থা থেকে মুক্তি পেয়েছে। তবে শারিরীক মুক্তি অনেকটা হলেও নাক-মুখ খোলার মুক্তি এখনও মেলেনাই। আমাদের মত স্কুলের বাচ্চাদের সকলের মুখেই মাস্ক। দূরবর্তী অঞ্চলের স্কুলের বাচ্চাদের স্বাস্থ্য সচেতনতার এ দৃশ্য দেখে ভাল লাগে।

বাচ্চাদের নিয়ে একসাথে ছবি তুলি। কয়েক মাসের চলমান বৃষ্টির পানি খাওয়া রাস্তার দুধারের অতি সবুজ গাছগুলো সকালের রোদে চক চক করছে। ছবি নেয়ার পর বাচ্চাদের মাথায় হাত বুলিয়ে বিদায় নিয়ে গাড়িতে এসে বসি। গাড়ি আবার চলতে শুরু করে। ক্ষণেক আগে স্কুলের বাচ্চাদের সাথে তোলা দুর্লভ ছবি মোবাইলের পর্দায় দেখতে দেখতে গন্তব্যের দিকে এগিয়ে যাই।

লেখক-ডিআইজি, সিলেট রেঞ্জ।

ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন :)

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x