ই-পেপার

আফতাব চৌধুরী

সুস্থ, সুন্দর পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদ বিশেষ করে মাটি ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণের মতো আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় প্রবেশ করার প্রাক্কালে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করি সে সৌন্দর্যের পূজারী প্রকৃতিবাদী কবি কাউপারকে (cowper), যার কণ্ঠে একদা ধ্বনিত হয়েছিল সে অমোঘবাণী God made the country and man made the town- সৃষ্টিকর্তা সৃষ্টি করেন দেশ আর মানুষ পত্তন করে নগরের। তাই দর্শন চিন্তায় আমরা দেখতে পাই প্রকৃতিকে মানুষ রচিত আইনের ঊর্ধ্বে এমনকি রাষ্ট্রের চেয়ে সার্বভৌম বলে গণ্য করা হয়েছে। একই চিন্তাধারা প্রতিফলিত করে অন্য এক মনীষী অত্যন্ত সাবলীলভাবে বলেছিলেন পুরো বিশ^ যেন এক অখ- গ্রাম সমবায়।

বস্তুত পশু-পাখি, বন-জঙ্গল প্রভৃতির সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক নিতান্তই আত্মিক চিরন্তন। এতে একটা নিবিড়তা খুঁজে পাওয়া যেত। মাঠে কর্মরত মানুষের পাশাপাশি পাখির দঙ্গল ছিল সাধারণ দৃশ্য। নির্দিষ্ট ধারায় চলতো উভয়ের কাজ। আজ সে সুখকর। পরিস্থিতি অনেকটা বিঘ্নিত, বিপর্যস্ত।

মানুষ প্রকৃতি ও পশু-পক্ষীর তাত্ত্বিক সম্পর্কের কথা ছাড়াও জীবনের প্রয়োজনে এদের সংরক্ষণের প্রশ্ন আসে। ইতিহাস থেকে আমরা জানতে পারি ষোড়শ শতক থেকে উনিশ শতকের শেষ ভাগ পর্যন্ত ইউরোপের বনাঞ্চলের একটি বৃহৎ অংশ নির্মূল হয়ে যায় মানুষের উৎপাদন কর্মের বিস্তৃতি ঘটার কারণে। অন্যদিকে প্রাচীন ভারতবর্ষের এ মর্মে একটা চিত্র আমাদের চোখে পড়ে। সম্রাট অশোক সর্বপ্রথম বন সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণ করেন এবং বন্যপ্রাণী শিকারে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

মানুষ ও প্রকৃতির সমন্বয়ী ধারণা সময়ের প্রবাহে অনেকখানি পরিবর্তিত হয়েছে। তবুও বন্যপ্রাণী ও বনাঞ্চলের বৈজ্ঞানিক গুরুত্বের কথা ছেড়ে দিলেও একটা নান্দনিক আকর্ষণ থাকবেই। তাই প্রকৃতির দান এ বনাঞ্চল ও বন্যপশু পক্ষী রক্ষার একটা তাগিদ মানুষের মধ্যে অনুভূত হচ্ছে। অথচ মানুষের অবহেলায় ইতিমধ্যে হারিয়ে গেছে অনেক বনাঞ্চল। কদিন আগে প্রকাশিত একটি জাতীয় পত্রিকার সম্পাদকীয়তে একটি নিবিড় ম্যানগ্রোভ অরণ্য মানুষের লোভ লালসায় কীভাবে বিস্তীর্ণ জলাভূমিতে পরিণত হলো তার একটা অনবদ্য চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। এ হারিয়ে যাওয়া বনটি হলো ২৩ হাজার একরজুড়ে অজস্র বৃক্ষ লতা গুল্মাচ্ছাদিত চকরিয়া সুন্দরবন- বিশেষজ্ঞদের ভাষায় দ্য লস্ট ফরেস্ট। ১৫বছর আগেও বিশ্ব ঐতিয্য সুন্দরবনের মতোই ছিল সমৃদ্ধ-এর ভৌগোলিক অবস্থান ছিল কক্সবাজার জেলার মাতামুহুরী ও মহেষখালী চ্যানেলের যেখানে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে সেখানে, যা আজ সম্পূর্ণ বিলুপ্ত এবং অদৃশ্য।

এ বনাঞ্চলের সমূলে বিনষ্টের কারণ অনুসন্ধান করতে গেলে আমরা দেখি মানুষের অতি লোভ-লালসা এ জন্য দায়ী। চকরিয়া সুন্দরবনকে নিশ্চিহ্ন করে চিংড়ি ঘের আর ঘের-কেন্দ্রিক লোকালয় গড়ে তোলার সূচনা হয় আশির দশকে। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে শত শত একর জমি লিজ দেওয়ার মাধ্যমে গড়ে উঠে চিংড়ি ঘের যার ফলশ্রুতিতে ব্যষ্টি-সমষ্টি নয়-দেশও নিঃসন্দেহে উপকৃত হয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আহরণে। কিন্তু পরিবেশ, প্রকৃতির যে ক্ষতি হয়েছে, তা সত্যিই অপরিসীম এবং অপূরণীয়। বৃক্ষহীন এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে অনেকখানি। বিলম্বে হলেও আজ বনাঞ্চল ও বনজ প্রাণী রক্ষার গুরুত্ব আমরা উপলব্ধি করতে শুরু করেছি। ক’দিন আগে একটি জাতীয় পত্রিকার এক প্রতিবেদন থেকে জানতে পারি, খুলনার শহীদ হাদিস পার্কের শহীদ বেদীমূলে বিশ্বের ঐতিহ্য সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও রক্ষার জন্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে গৃহীত ১৮টি সুপারিশের ভিত্তিতে বাস্তবতার মাপকাঠিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর আগামী মার্চের কোনো এক সময় চূড়ান্ত রূপরেখা গৃহীত হবে এ মর্মে আশাবাদ ব্যক্ত হয়েছে। কিন্তু সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ীত হয়নি বরং নির্ধারিত অভয়ারণ্যগুলো কেবল যে অবৈধ শিকারিদের উপদ্রবে বিধস্ত হচ্ছে তা নয়, বরং বন-জঙ্গলও উজাড় হচ্ছে।

১৯৬৬ এবং ৬৭ সালে ওয়াল্ড ওয়াইল্ড ফান্ড ফর ন্যাচার ইন্টারন্যশনাল এর একটি টিমের অভিযানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের আওতায় দায়িত্বে দেওয়া হোক। এ সিদ্ধান্ত অনুসারে বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ১৯৭৪ এর আওতায় এ নিষেধাজ্ঞা সার্বিকভাবে দেশের বন জঙ্গলসহ পশু-পাখি বিলুপ্তি ধারা রোধ এবং অতিথি পাখির আগমনকে উৎসাহিত করা হয়েছে। পশু পাখি ও বন্যপশু সংরক্ষণের জন্য পৃথক-পৃথক এলাকাও নির্ধারিত হয়েছিল।

১৯৮২ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি কনভেনসন অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইন এনডেনজারড সি-সিজ অব ওয়াইন্ড ফোনা এন্ড ফ্ল্যেরা গণনা চুক্তির মাধ্যমে দেখতে পাওয়া যায় ৩২ প্রজাতি স্তন্যপায়ী, ১৭ প্রজাতি সরীসৃপ ১১ প্রজাতি বন্য পাখি এবং দুই প্রজাতির ব্যাঙ বিলুপ্তির পথে এবং গুঁইসাপ দ্রুত বিলুপ্তির কারণে, ১৯৮৬ সালে এর নিধন এবং রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৯১ সালে দি ইন্টরন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার এন্ড ন্যাচারাল রিসোর্সেস উদঘাটন করে ১.৭৮ মিলিয়ন গুইসাপের চামরা জাপানে রপ্তানি করা হয়েছে-এটি ভাবতেই অবাক লাগে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবহেলা এ জন্য দায়ী। ১৯৯৬ সালে নভেম্বর মাসে ঢাকা চিড়িয়াখানায় পাঁচ দিনের মধ্যে পাঁচটি বাঘের মৃত্যু ঘটে।

বৃক্ষনিধন সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনায় না গিয়ে ভোলার দৃষ্টান্তকে আমরা প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করতে পারি। চলিত মৌসুমে ভোলার ৩০টি ইট ভাটায় প্রায় ৫ কোটি টাকার কাঠ পোড়ানো হয়েছে। বন রক্ষীরা পাচারকালে ২৫টি নৌকা ও কয়েকটি ট্রাক আটক করে। আটককৃত কাঠের মূল্য ৪০ লাখ টাকা। একে কেন্দ্র করে বেশ ক’জন পাচারকারীকে হাজতে পাঠানো হয়েছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইট পোড়ানো (নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮৯) এর ৭ ধারা অনুযায়ী এহেন অপরাদের জন্য ৬ মাসের কারাদন্ড এবং অনধিক টাকা ৫০,০০০/- অর্থ দণ্ড কিংবা উভয় দন্ডের বিধান আছে। অথচ পাচারকারীরা এতে কোনো ভ্রুক্ষেপ না করে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।

সুন্দরবনকে বাঁচান আজ কেবল বাংলাদেশের দাবি নয়, এটি আন্তর্জাতিক স্লোগানে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, বিশ্ব ঐতিহ্যের সাক্ষী বাংলাদেশের সুন্দরবনের অস্তিত্ব আজ ধ্বংসের মুখে- বিলুপ্তির পথে। সুন্দরবনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় অজস্র সংবাদ যথা সুন্দরবনের গাছের রোগ, প্রাণী বৈচিত্রের বিলুপ্তি, বনজ সম্পদ ধ্বংস, বন্য প্রাণীর নির্বিচার নিধন ও চোরা শিক্ষার রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা হ্রাস ইত্যাদি খুবই গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করা হচ্ছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছে আরেক ভয়াবহ তথ্য সেটি হলো পৃথিবীব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, যার পরিণতিতে সুন্দরবনের এক বিরাট অংশ আগামী ৫০ বছরের মধ্যে সমুদ্র গর্বে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। পরিবেশ বিষেজ্ঞরা এ অতুলনীয় বনভূমির অস্তিত্বে আশঙ্কা চিন্তিত।

সুন্দরবনের ধ্বংসের মূল কারণের দিকে যদি দৃষ্টি নিবদ্ধ করি, তাহলে দেখতে পাই এক বিরাট স্বার্থান্ধ গোষ্ঠী মনে করে এ বনাঞ্চল সম্পদের উৎস। এর পেছনে সুস্পষ্ট অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক স্বার্থ আছে। সাম্প্রতিককালে খুলনায় অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে অতিথিদের ভাষণ থেকে জানা গেছে যে প্রায় ২৫ লাখ লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে উপার্জনের জন্য সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। তাই একদিকে যেমন প্রণীত আইনের ভয় দেখিয়ে এ স্বার্থান্ধ লোভাতুর গোষ্ঠীকে নিরস্ত করার প্রয়াস পেতে হবে, তেমনি তাদের বিকল্প কর্ম সংস্থানের প্রতি উৎসাহিত করতে হবে। সুন্দরবনের ধ্বংসের অর্থই হবে ঝড়, বন্যা, জলোচ্ছ্বাসে জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি। এতে সমূহ ক্ষতি হবে মানুষেরই।

এটিই উপযুক্ত সময় সুন্দরবনকে সম্পূর্ণ সংরক্ষিক্ষত বনাঞ্চলে পরিণত করতে হবে এবং একে কেন্দ্র করে কাঠের ব্যবসা, গোল পাতার ব্যবসা, বন্যপ্রাণীর চামড়া, মাংসের ব্যবসা বন্ধ করার সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমরা এর সামাজিক আকর্ষণকে উপেক্ষা করতে পারি না। উল্লিখিত সেমিনারে বিশেষজ্ঞদের ভাষণে এমন ইঙ্গিত রয়েছে যে এ বনের সব সম্পদ রক্ষা করে ও বিকল্প পথে কোটি কোটি টাকা আয়ের ব্যবস্থা করা যায়।

সুন্দরবনের উদ্ভিদ ও প্রাণী বৈচিত্র্য এখনো যতটুকু আছে, তা সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকৃষ্ট করার ক্ষমতা রাখে। এ পর্যটন শিল্পকে বিকশিত করলে একদিকে বন্যপ্রাণী ও বনভূমি রক্ষা পাবে, তেমনি একে কেন্দ্র করে অব কাঠামো গড়ে উঠবে এবং বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

সংশ্লিষ্ট আইন যেমন ইট- পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮৯, বন-আইন ১৯২৭, বাংলাদেশ বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ- ১৯৭৪। ইট পোড়ানো (নিয়ন্ত্রণ) আইন ১৯৮৯-এর শাস্তিমূলক ধারা আগে আলোচিত হয়েছে বন আইন ১৯২৭ এর কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিধান হলো-

(ধ) যে ব্যক্তি সরকার কর্তৃক প্রণীত বিধি ব্যতীত নিষ্কৃত বনভূমি কৃষি কার্যের উদ্দেশ্যে বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নতুনভাবে পরিষ্কার করে। (ধ) কোনো সংরক্ষিক্ষত বন থেকে কাঠ অপসারণ করে। (ধ) কোনো সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অগ্নিসংযোগ করে অথবা সরকার প্রণতি কোনো বিধি লংঘন করে কোনো অগ্নি প্রজ্জ্ব্যলিত করে অথবা বনের ক্ষতি হতে পারে এরূপ কোনো অগ্নিপ্রজ্বলিত করে রেখে যায়। (ধ) কোনো বৃক্ষ পতিত করে, রিং আকারে বাকল তোলে ডালপালা কেটে বাকল চেঁচে রস সংগ্রহ করে বা কোন বৃক্ষ গোড়ায় অথবা বাকল তোলে অথবা পাতা ছিড়ে অথবা অন্য কোনো প্রকার বৃক্ষের ক্ষতি সাধন করে। (ধ) চাষাবাদ বা অন্য কাজের উদ্দেশ্য কোনো ভূমি পরিস্কার করে। (ধ) সরকার কর্তৃক এতদবিষয়ে প্রণীত কোন বিধি লংঘণ করে শিকার করে। গুলি করে, মাছ ধরে, পানি বিষাক্ত করে অথবা ফাঁদ পাতে। (ধ) আইনানুগ কর্তৃত্ব ব্যতীত কাঠ চিড়ানো গর্ত বা করাতের অবস্থান তৈরি করে অথবা বৃক্ষকে কাঠে রূপান্তরিত করে। তাহলে সংশ্লিষ্ট দন্ড প্রদানকারী আদালত তাঁকে বৃক্ষের ক্ষক্ষতি সাধন করার জন্য ক্ষতি পূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন এবং এরূপ ক্ষতি পূরণের অতিরিক্ত সর্বোচ্চ পাঁচ বছর অনন্য ৬ মাস পর্যন্ত কারাদ- এবং সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা ও অনন্য ৫০০০ টাকা জরিমানা করতে পারেন। বাংলাদেশ বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ) আদেশ ১৯৭৪ এ শাস্তির বিধান আছে- সর্বোচ্চ দুই বছর কারাদন্ড অনন্য এক বছর। জরিমানা সর্বোচ্চ ২০০০ টাকা। সর্বনিম্ন ১০০০।

১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বাংলাদেশকে সবুজে সবুজময় করে দেওয়ার মতো যথেষ্ট নার্সারি, চারা কলপ, শ্রম, উদ্যোগ, অর্থায়ন, আনুষ্ঠিকতা সবই আছে তবে কেন আমাদের সর্বক্ষেক্ষত্রে বিপর্যয়। তার কারণ আমাদের নেই যথোচিত আন্তরিকতা, সচেতনতা ত্যাগী মনোভাব। আইন আছে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা আইন প্রয়োগে ব্যর্থ। প্রকৃতিকে নির্বাসনে পাঠিয়ে প্রবৃত্তিকে তুষ্ট করার লক্ষ্যে এ যেন সে মাথা কেটে চরণ সেবা করা।

আজ ভাবতে দুঃখ হয় বাক সর্বস্বতা আমাদের মনন শক্তি হরণ করে নিয়েছে। বন সৃজন, বৃক্ষ রোপণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ সম্পর্কে বক্তৃতা- বিবৃতির অভাব এদেশে কখনও হয়নি। সম্প্রতি প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে অত্যন্ত দুঃখ ও উদ্বিগ্নতার সঙ্গে বলা হয়েছে যে সুন্দরবনের দুবলাচর এখন শত শত মরা কাছিম ও হাঙ্গরের বাচ্চার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। বিখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার এখন হয়তো তিন-চার শতের বেশি নেই। কুমির ও ঘড়িয়াল বিলুপ্ত প্রায়। পরিবেশদূষণ এ বনাঞ্চল ও জলাশয়ের যে অপূরণীয় ক্ষতি সাধন করছে সে দিকে কারো লক্ষ্য নেই উপরন্তু এক শ্রেণীর জেলে মৃত মাছকে শুঁটকীতে মিশিয়ে বাজারজাত করে প্রভূত অর্থ অর্জনে ব্যস্ত।

লেখক : সাংবাদিক ও কলামিষ্ট। বৃক্ষরোপণে জাতীয় পুরস্কার (১ম) স্বর্ণপদক প্রাপ্ত।

ভালো লাগলে শেয়ার করে দিন :)