ইরানী বিশ্বাস
কিছুটা বোকামি মিশ্রিত স্বরে বলে,
– ম্যাডাম আমি। ভেতরে আসবো?
– তুমি ! কে তুমি ? বুয়া.. বুয়া..। মোহিনী কিছুটা ভয় পেয়ে যায়। বুয়া ছুটে আসে ভেতরে। তখনো পর্দার আড়ালে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাচু। বুয়াকে দেখে বিচলিত হয়ে ওঠে মহিনী। তারপর অভিযোগের সুরে বলে,
– কোথায় ছিলে তুমি?
– ম্যাডাম, আমি তো ঘর ঝাড়– দিতাছিলাম।
– কে ওই লোকটা?
– ম্যাডাম, আমি তানরে চিনি না। তয়, সাদেক আলী কইল, আপনে তানরে চাকরি দিতে চাইছিলেন।
– চাকরি ! কাকে চাকরি ! কি সব আবোল তাবোল বলছো। কথা বলতে বলতে হয়তো কিছু মনে পড়ে গেল তাই আবার চেহারায় পরিবর্তন এনে বললেন,
– বুঝতে পেরেছি। গতকাল বিকালে যে ছেলেটা এসেছিল। তার কথা বলছো।
বুয়া কিছুটা আশ্বস্থ হয়ে মাথা ঘুরিয়ে পাচু’র দিকে তাকায়। তারপর গলার স্বর নীচু করে ভেতরে আসার জন্য ডাকে। পাচু যেন এই ডাকের অপেক্ষায় ছিল। তাই তৃপ্তির হাসি মুখে ঝুলিয়ে গ্লাস হাতে রুমে প্রবেশ করে। পাচু এতটাই মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে, মোহিনী কিছুটা বিব্রত হয়ে পড়ে। তারপর বিরক্ত গলায় বলে, এক হাত পিছনে যাও। পাচু একবার সামনে তাকিয়ে নিজের ভুলটা বুঝতে পেরে জিভ কেটে কিছুটা পেছনে দাঁড়ায়। তারপর মোহিনী হাতের ইশারায় বলে হাতটা এগিয়ে দিতে।
পাচু গ্লাসের হাতটা বাড়িয়ে দিতেই মোহিনী সেটা নিতে নিতে বলে,
– সব সময় আমার সামনে এসে দাঁড়ালে এই এতটা দুরে দাঁড়াবে, মনে থাকবে?
– জ্বী ম্যাডাম। বাধ্য অধিনস্তের মতো কিছুটা সামনে ঝুকে বিনয়ের সাথে জবাব দেয় পাচু। মাথা ঘুরিয়ে ঘরের চারিদিকটা ভাল করে দেখতে থাকে সে। বুয়া এরই মধ্যে ঘরের মধ্যে পড়ে থাকা গতকাল রাতের কাপ-পিরিচ, বাটি নিয়ে চলে গেছে। পাচু হয়তো মোহিনীর আদেশের অপেক্ষায় তখনো দাঁড়িয়ে আছে। মোহিনী খাওয়া শেষ করে খালি গ্লাসটা পাচুর হাতে দিতেই সে রুম থেকে বের হবার জন্য পা বাড়ায়। পেছন থেকে মোহিনীর ডাক শুনে আবার ঘুরে দাঁড়ায়।
– শোন ।
কোন কথা না বলে মাথা নীচু করে সামনে দাঁড়ায় পাচু। পায়ের নীচে কার্পেটের রং আর ডিজাইনে মনোনিবেশ করে। হঠাৎ মোহিনীর প্রশ্ন শুনে চোখ তুলে তাকায় তার দিকে।
– কি কি কাজ জানো তুমি?
– জ্বী ম্যাডাম। আমি সব কাজ জানি। আপনি যা বলবেন, আমি তা-ই করতে পারি।
– গুড। তাহলে আজ থেকে তুমি ঘরের সব কাজ করবে। দেখো চুরি-টুরি যেন করে পালাবার ধান্ধা করো না।
– না না ম্যাডাম। কি যে বলেন, এমন সুখে থাকতে কেউ চুরি করে পালায়ে যায়? আমি তো ভাবছি বাকী জীবনটা এই খানেই কাটাবো।
পাচুর কথা শুনে উচ্চস্বরে হেসে ওঠে মোহিনী। তারপর বলে ঠিক আছো। এরপর তোমাকে একটা বিয়ে দিয়ে দুজনকে রেখে দেবো। তাতে তোমারও লাভ, আমার ও লাভ।
দিন গড়িয়ে যায়। এরই মধ্যে মোহিনী বুয়াকে ডেকে বলে দিয়েছে, আজ থেকে পাচু বাড়ির সব কাজ করবে। বুয়ার ছুটি। বুয়া কিছুটা মন খারাপ করে দুপুরে বিদায় নিয়েছে। সন্ধ্যা নামতেই পাচুর কানে ভেসে আসে মোহিনীর কথার আওয়াজ। সে কার সঙ্গে যেন কথা বলছে। রান্না ঘরের কাজ বন্ধ করে দরজার কাছে এসে দাঁড়ায়। দরজা খোলা। পর্দা ঝুলছে রুমে। মোটা পর্দা ভেদ করে রুমের মধ্যে কিছু দেখা না গেলেও কথার তারতম্যে আন্দাজ করতে পারছে পাচু। কারো সঙ্গে অভিনয় করছে। আর আজ রাতেও কারো সর্বনাশ হতে চলেছে। অসাবধানতাবশত পাচু পর্দার কিছুটা কাছাকাছি এসে পড়ে। আর সেটা মোহিনীর চোখ এড়ায় না। তাই তো চিৎকার করে ওঠে,
– কে? কে ওখানে?
নিজের দোষ বাঁচাতে, পর্দা সরিয়ে নিজের মুখ বার করে জাবাব দেয়,
– ম্যাডাম আমি। বিকালের নাস্তার টাইম হইয়া গেছে। কি খাইবেন, তাই জিগাইতে আইছিলাম।
কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে মোহিনীর। তাই সে আস্বস্ত হয়ে উত্তর দেয়,
– ও, তুমি? ঠিক আছে যাও, আমার জন্য এক গ্লাস জুস নিয়ে এসো।
পাচু ফিরে আসে রান্না ঘরে। লুঙ্গির খোটের মধ্যে থাকা মোবাইল বের করে কাকে যেন ফোন করে পাচু। তারপর এক গ্লাস জুস দিয়ে আসে মোহিনীকে।
আজ মোহিনীকে সত্যি সুন্দর লাগছে। সোনালী রংয়ের একটি গাউন পরেছে। দেখতে মায়াবী লাগছে। নেশাধরা চোখের আবছা আলোতে এ সাজ যেন স্বর্গীয় মাধুর্য্য ছড়ায়। তাইতো তার রূপের মোহিমা যেন চারিদিকে ঝলকানি দিচ্ছে। অনেক্ষন আগেই একটা গাড়ি এসে অপেক্ষা করছে বাড়ির ভেতরে। পাচু বুঝতে পারে এখনি মোহিনী বের হবে। হিল তোলা জুতায় খট খট শব্দ তুলে রুম থেকে বেরিয়ে যাবার সময় পাচুকে বলে,
– রুমের সব গুছিয়ে রেখো। আর একদমই বাইরে যাবে না, ঠিক আছে।
মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানায় পাচু। তারপর চোখের সামনে দিয়ে কার্ল করা চুল দুলিয়ে চলে যায়। যাবার সময় সদ্য ছিটানো পারফিউমের গন্ধে চারিদিকের বাতাস ম ম করতে থাকে। আবেগী গন্ধে বিভোর হতে ইচ্ছে করছে পাচুর। হঠাৎ নিজেকে গুটিয়ে নেয়। তারপর গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যায় সামনে। যে দিকে মোহিনী হেটে গেছে।
কালো গাড়িটির দিকে এগিয়ে যেতেই গেটের বাইরে পুলিশের গাড়ি হর্ণ দিচ্ছে। মোহিনী একটু অবাক হয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করে,
– দেখোতো কি হচ্ছে বাইরে?
দারোয়ান মোহিনীর দিকে তাকিয়ে অসহায়ের মতো বলে,
– ম্যাডাম, পুলিশের গাড়ি। কি করবো, খুলবো?
– না। আমি দেখছি। ভারী গলায় এ কথা বলে মোবাইল বের করে কাউকে কল করার জন্য। এমন সময় পেছনে শব্দ শুনতে পায়,
– হ্যান্ডস আপ।
মাথা ঘুরিয়ে তাকায়। মোহিনীর চোখ এবার কপালে। যারপর নাই অবাক হয়ে যায়। তারপর বিস্মিত হয়ে জিজ্ঞেস করে,
– পাচু , তুমি?
– ইয়েস ম্যাডাম। আমি। ইন্সপেক্টর তাহির।
মোহিনীর বিস্ময়ের শেষ নেই। পাচুর হাতে রিভলবার। আর গুলি বেরুনোর নল ঠিক তার কপালের দিকে তাক করানো। এরই মধ্যে গাড়ি থেকে ৭/৮ জন নারী ও পুরুষ পুলিশ খোলা গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেছে। মোহিনী এখন পুলিশ বেষ্টনীর মধ্যে আবদ্ধ। কিছুই বুঝতে পারছে না সে। কি হয়ে গেলো মুহুর্তে। গাড়ির ড্রাইভারের হাতে হাতকড়া পরানো হয়ে গেছে। মোহিনীকে একপ্রকার জোর করে পুলিশের গাড়িতে তুলে থানার দিকে রাওনা হয়।
শুভ অপেক্ষা করছে থানায়। তাকে আগে থেকে কল করে আনিয়েছে তাহির। চোখের সামনে দাঁড়িয়ে আছে স্বপ্নের রানী। পার্থক্য শুধু একটাই যে হাতে ভালবাসার কঙ্কন পরাতে চেয়েছিল, সে হাতে দস্তার কঠিন হাতকড়া।
অবাক চোখে তাকায় শুভ। তারপর কঠিন শব্দে উচ্চারণ করে,
– রাইসা, তুমি?
– না, ও রাইসা নয়। ওর নাম মোহিনী। কি আমি ঠিক বলছি তো? তাহির জিজ্ঞাসা দৃষ্টিতে তাকায় মোহিনীর দিকে।
– মোহিনী?
– হ্যা। ওর নাম মোহিনী। শুভর প্রশ্নের উত্তর দিয়ে তাহির আবার মোহিনীর দিকে তাকায়। তারপর আবার বলে,
– ম্যাডাম, এবার বলেন, আর কি কি নাম আছে আপনার?
– ভাইয়া আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। কথাগুলি বলতে বলতে শুভ বিচলিত হয়ে ওঠে। একটা দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যায় শুভ। তার প্রশ্নগুলির উত্তর পরিস্কার করতে তাহির আবার মোহিনীর মুখোমুখি হয়। তারপর বলে,
– এবার আপনার নিজের মুখে বলেন, রাইসা কখন মোহিনী হল? কিভাবে হলো?
রাগে দুঃখে ক্ষোভ প্রকাশ করতে বিষধর সাপের মতো ফোস ফোস করতে থাকে মোহিনী। তবু সে মুখ ফুটে কিছু বলে না। কিন্তু তাহির তো ছাড়বার পাত্র নয়। তাই সে অধিনস্ত মহিলা পুলিশকে ডেকে বলে,
– নিয়ে যাও ম্যাডামকে। দেখবে সুড়সুড় করে সব কথা বেরিয়ে আসবে।
মোহিনী এবার একটু ভয় পেয়ে যায়। তবু নিজের দুর্বলাতাকে ঢাকতে উত্তেজিত হয়ে বলতে থাকে,
– কাজটা তুমি ভাল করলে না পাচু।
উপস্থিত সকল পুলিশ সদস্য হেসে ওঠে। তারা নিজেদের মধ্যে ইসারায় কথা বলে,
– পাচু কে? স্যার আবার পাচু হলো কবে থেকে। তাহির একটুও রাগ না করে বরং মুখে হাসির রেখা টেনে বললেন,
– জানেন তো ম্যাডাম, পাচু’রা সব সময়ই খারাপ। তারা কখনোই ভাল কাজ করতে জানে না। আপসোস হচ্ছে আপনার জন্য। পাচুর সাথেই শেষ পর্যন্ত আপনার দেখা হলো।
মোহিনীর হাত ধরে টানতে থাকে মহিলা পুলিশ সদস্য। এ সময় শুভর দিকে তাকিয়ে বিনয়ের সাথে অভিমানী প্রেমিকার মতো বলতে থাকে,
– শুভ, তুমি কি এদের এসব কথা বিশ্বাস করো?
শুভ কি বলবে বুঝতে পারছে না। সে বোবা হয়ে বসে রইল। একদিন যে মেয়েটার প্রেমের বাতাসে মন উড়িয়ে দিয়েছিল। মনে হয়েছিল, প্রেমিকের চোখের দিকে তাকিয়েইতো এক জীবন পার করে দেওয়া যায়। আজ সেই মেয়েটি এত কাছে থাকলেও তার দিকে চোখ তুলে তাকাতে ইচ্ছে করছে না। নরম পালকের মতো হাত দুটি স্পর্শ করতে এত ব্যকুলতা যার। এত কাছে পেয়েও তাকে স্পর্শ করার কোন বাসনাই আজ মনে জাগছে না। কি যেন একটা কষ্ট দলা পাকিয়ে উঠছে বুকের মধ্যে। মহিলা পুলিশটি আবার সজোরে টান দিতেই মোহিনী হিংস্র বাঘিনীর মতো ফুসে উঠে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে। এ সময় মহিলা পুলিশটি জোর এক থাপ্পড় মারে মোহিনীর গালে। মোহিনী নিমিষে যেন ফুটো বেলুনের মতো চুপসে যায়। কিছুক্ষন নীরব দাড়িয়ে থাকে। তারপর আপন মনেই বলতে লাগলো,
অভাবের সংসারে জন্ম হয়েছিল। দরিদ্র শব্দটা কিছুতেই পিছু ছাড়তে চাইছিল না। কি করলে সংসারের অভাব দুর হবে, ভেবে ভেবে মায়ের রাতের ঘুম নষ্ট হতো। সদ্য বাবাকে হারানো মেয়েটিকে শহরের এক মধ্যবিত্ত পরিবারে কাজের মেয়ে হিসাবে পাঠানোর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
বয়স তখন ১৩/১৪ বছর। এই শহরে এক বাসায় আমি কাজের জন্য যোগ দিয়েছি। সেই বাসায় মেম সাহেবের এক মেয়ে ছিল, ইউনিভার্সিটিতে পড়ে। নাম তার তন্বী। তাকে দেখতাম প্রায়ই ফোনে কথা বলতো। আমি চা-নাস্তা দিতে বা কোন কাজে তার রুমে গেলে শুনতাম তার কথা। তার কথা শুনে আমি অবাক হতাম। সে প্রায়ই মিথ্যা গল্প করতো। কখনো বলতো গাড়ি নষ্ট হয়ে গেছে টাকা লাগবে। কখনো বলতো এটিএম কার্ড আটকে গেছে এমার্জেন্সী টাকা লাগবে। এ বিষয়গুলি আমি মনোযোগ দিয়ে শুনতাম। তারপর নিজের মনের মধ্যে স্বপ্ন দেখতে থাকলাম আমিও যদি এ রকম মিথ্যা গল্প বলে কারো কাছে টাকা চাই। তাহলে হয়তো পাবো। পাশের বাসার আন্টিকে একদিন গিয়ে বললাম, আমার বাবা অসুস্থ। কিছু টাকা দিলে উপকার হতো। অন্য কাউকে বললাম, বোন অসুস্থ। অথবা বোনের বিয়ে। কখনো বা মা অসুস্থ। এভাবে আমি টাকা রোজগার করতে থাকি। এই পাওয়াগুলি আমার আকাংখা আরো বাড়িয়ে দিতে থাকে। তখন আমি শুরু করলাম অন্য কৌশল। বাড়িতে কেউ না থাকলে তন্বী আপুর ড্রেস পরতাম আর আয়ানায় নিজেকে তন্বী আপুর মতো কল্পনা করতাম। বাথরুমে গিয়ে তার মতো কথা বলতে, স্টাইল করতে শিখতাম। সুন্দর ড্রেস পরার পর নিজেকে অন্যরকম লাগতো।
একদিন বাসায় কেউ ছিল না। আমি একা একা বাসায়। সেদিন আমি সুন্দর করে আপুর ড্রেস পরলাম। তারপর বাসায় তালা দিয়ে বেরিয়ে পড়লাম রাস্তায়। যেতে যেতে একটা গল্প সাজালাম। দেখলাম কাজ হলো। সেদিন আমি ২,০০০ টাকা পেলাম। তারপর মাঝে মাঝে বের হতাম এবং আমি সাকসেস হতে লাগলাম। এভাবে একসময় ওই বাসা থেকে পালিয়ে গেলাম। আর অভিনব কৌশল অবলম্বন করে প্রতারণা শুরু করি। ধীরে ধীরে আমি একটি গ্রুপ তৈরি করি। আর এভাবেই আমি হয়ে উঠলাম সুন্দরী, স্মার্ট, ধনীর দুলালী। তারপর আমি জরিনা থেকে জেরি, জসমিন, রোজিনা, রাইসা, সারা, তমা, মোহিনী হয়ে উঠি। আমি ইচ্ছে করে এসব করতে চাইনি। একটু ভাল থাকার লোভে প্রথম প্রতারণা শুরু করি। কিন্তু আজ বুঝতে পারছি, একটা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিলে সেগুলি একসময় ডালপালা বিস্তার করে। কথা বলতে বলতে শুভর হাত ধরে বলে,
– বিশ্বাস করো, আমি তোমাকে ভালবাসি।
অবাক হয়ে তাকায় শুভ। কোন কথা বলতে পারে না। হয়তো এই মোহিনীর মুখে নিজের হারিয়ে যাওয়া প্রেমিকা রাইসাকে খুঁজে ফিরছে।
– বিশ্বাস করো, আমি তোমকে সত্যি ভালবাসি।
অবাক হয়ে মোহিনীর মুখের দিকে তাকিয়ে প্রেমিকের গলায় বলতে থাকে শুভ,
– তুমি আমাকে ভালবাসো !
– হ্যা ভালবাসি। চলো আমরা বিয়ে করি।
এতক্ষণ স্থির হয়ে বসে থাকলেও এবার আর স্থির থাকতে পারেনি শুভ। উঠে গিয়ে মোহিনীর গালে একটা চড় মারে। মোহিনী অবাক হয়ে তাকায় শুভর দিকে ।
– লজ্জা করে না, এ কথা বলতে? মানুষের ইমোশান নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলে। তারা কখনো কারো প্রেমিকা বা স্ত্রী হতে পারে না।
শুভর চোখ দিয়ে আগুন ঠিকরে পড়তে থাকে। আর কোন কথা বলতে পারে না। দ্রুত স্থান ত্যাগ করে বেরিয়ে যায়। রাইসা হাতকড়া পরা হাত তুলে ডাকতে থাকে
– যেওনা প্লিজ। একটিবার আমার কথা শুনে যাও।
শুভ ফিরে তাকায় মোহিনীর দিকে। মহিলা পুলিশটি মোহিনীকে টানতে টানতে নিয়ে যায়। শুভ ততক্ষণই তাকিয়ে ছিল যতক্ষণ না মোহিনী তার দৃষ্টির আড়ালে চলে না যায়। শুভর দৃষ্টি জুড়ে শুধুই ঘৃণা।
(সমাপ্ত)
লেখক : সাংবাদিক, সাহিত্যিক,
নাট্যকার ও নাট্যপরিচালক।