মোছাঃ ফরিদা ইয়াসমিন
নৃশংসতা ও পুলিশিং
পুলিশ অপরাধ দমনের মাধ্যমে বা নৃশংসতাকারীকে আইনের আওতায় এনে সহিংসতার শিকার ব্যক্তিকে, তার কষ্টের সাময়িক মুক্তি দিতে পারলেও, ব্যক্তির কষ্টের যে ক্ষত তৈরি হয় বা তার মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী যে ভীতি বা ট্রমা কাজ করে তার জন্য কি করতে পারে বা পারবে তা এখন ভাববার বিষয়। কারণ, পুলিশের প্রতি মানুষের প্রত্যাশার ব্যাপ্তী দিন দিন বাড়ছে। মানুষের সব ধরনের সমস্যা যেমন- ব্যক্তিগত, পারিবারিক, নৈতিক, দলগত ও প্রাতিষ্ঠানিক সমস্যার সমাধান পুলিশই দিবে। আবার পুলিশ দিনের পর দিন নৃশংসতাকারীকে মোকাবেলা করতে করতে তার নিজের মধ্যে যে অদৃশ্য চাপ তৈরি হয়, সেই বোঝা বহন করার মতো সক্ষমতা তার আছে কিনা অথবা অদ্ভুত চাপ লাঘব করার মতো ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা আছে কিনা তাও এখন আলোচনার বিষয়। আমরা দেখেছি অনেক সময় পুলিশ ডিউটি করতে করতে হঠ্যাৎ ধপ করে রাস্তায় পড়ে যান অথবা বুকের ব্যথায় কুঁকড়ে বসে পড়েন। তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার আওতায় আনতে আনতে অনেক সময়, অনেকের প্রাণহানি ঘটে। পুলিশের কাছে জনগণের জান ও মালের সুরক্ষার চেয়েও বর্তমানে সামাজিক হলাহল, রাজনৈতিক অস্থিরতা, বৈশ্বিক টানাপোড়নে পুলিশের পেশাগত, শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক সেবার চেয়েও আমজনতার প্রত্যাশা অনেক বেশি। যেমন: ঘরের উঠতি বয়সী তরুণীটি একটি তরুণের সাথে চলে যাওয়া, স্বামী-স্ত্রীর দাম্পত্য কলহে পারিবারিক ঝগড়া-বিবাদ-মিমাংসা, উঠতি বয়সী তরুণদের মাদকাসক্তি ঠেকানো, পাড়ার উঠতি বয়সী কিশোরদের গ্যাং কালচার বন্ধকরণ, হাতের কাছে সহজলভ্য ডিভাইসের মাধ্যমে ঘরের সন্তানটির সাইবার আসক্তি ঠেকানোর কাজেও পুলিশকে সেবা দিতে হচ্ছে। দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে যে পুলিশটি অন্যের ঘরের প্রিয়জনদের সামলাচ্ছে, সে কিন্তু নিজের স্বাস্থ্য বা মানসিক স্বাস্থ্য বা তার নিজের পরিবার-পরিজনের ব্যাপারে ততটা নজর দিতে পারছে না। অন্যের বোঝা টানতে টানতে পুলিশ এখন মানবিক পুলিশ-জনতার পুলিশ। কিন্তু বর্তমানে এই মানবিক পুলিশের নিজের বা তার পরিবারের প্রতি মানবিক দায়িত্ব পালনে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। সার্বক্ষণিক ডিউটিরত, মানবিক পুলিশের নিজের জীবন, যৌবন, পরিবার-পরিজনদের মানসিক অবস্থা কি, সে খবর নেয়ার কেউ নেই। তার প্রমাণ পাই আমরা আমাদের সন্তান ‘ঐশী’র দ্বারা সংঘটিত নৃশংসতম ঘটনার মাধ্যমে অথবা বিভিন্ন কর্মস্থলে পরিবার-পরিজন কাছে না থাকায় অনেক পুলিশ, অবসন্ন ও ক্লান্ত হয়ে পড়ে একদিকে কর্মের বোঝা, অন্যদিকে পরিবার বিচ্ছিন্নতা। এহেন পরিস্থিতিতে অনেক পুলিশ মানসিক, পারিবারিক, আর্থিক টানা-পোড়নে উদ্বিগ্নতা, বিষন্নতা, খিটখিটে মেজাজ, মানসিক চাপ, হাইপার টেনশন ইত্যাদিতে ভুগে। যা তাদের আয়ূশক্তি কমিয়ে দেয় বিভিন্ন সময়ের দুর্ঘটনা আমাদের এসব স্মরণ করিয়ে দেয়।
সংকটাপন্ন মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা
মানসিক স্বাস্থ্যে মর্যাদাবোধ বিষয়টি শুধু রোগ নির্ণয় থেকে শুরু করে চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও নিরাময় প্রক্রিয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর অর্থ ব্যাপক। সংকটাপন্ন মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন ও বিশেষ ক্ষেত্র ব্যতীত জোরপূর্বক আটকে রাখা মর্যাদাহানি, নিম্নমানের সেবা, সঠিক সময়ে চিকিৎসা না পাওয়া এসব বিষয় মর্যাদার সঙ্গে জড়িত। এক দিনেই মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করা যাবে না। তবে মানসিক সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলা শুরু করা উচিত। তাহলে যারা সমস্যায় ভুগছে, তারা নিজেদের সমস্যার কথা বলতে আর সংকোচবোধ করবে না। এভাবেই মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া না হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিষন্নতা বিশ্বের প্রধান রোগ হয়ে উঠবে। আমাদের দেশে বিষন্নতাকে প্রাণঘাতী সমস্যা মনে করা না হলেও এটি মানুষের চিন্তা ও কর্মক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। এছাড়া কর্মক্ষমতা নষ্ট করতে পারে দুশ্চিন্তা, সিজোফ্রেনিয়া, প্যারানয়েড সিন্ড্রোম, আলঝেইমারসহ নানা ধরনের মানসিক রোগ।
নৃশংসতা প্রতিরোধ করতে বহুমুখী উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন। দারিদ্র বিমোচন কর্মসূচি, রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারী উদ্যোগে সর্বনিম্ন দারিদ্রপীড়িতদের জন্য সহায়তা, নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণের উদ্যোগ, সবধরণের জাতিগত বৈষম্য ও বর্ণবৈষম্যের অবসান, শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, কার্যকর বিচার ব্যবস্থা ও দক্ষ আইন-শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী গড়ে তোলা, অপরাধীদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া, সহিংস মানুষদের সনাক্ত করা ও চিকিৎসা দেয়া, তাদের হাত হতে অন্যদের নিরাপদ করা, আইন ও বিচার ব্যবস্থার সাথে কমিউনিটি বা সমাজের সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করা, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, গ্যাং কালচার নিয়ন্ত্রণ, করা, বিধ্বংসী অস্ত্র সীমিত করা বা ধ্বংস করে দেয়া (যেমন, রাসায়নিক ও পারমানবিক অস্ত্র) ও শিক্ষার প্রসারের মাধ্যমে নৃশংসতা প্রতিরোধ করা যায়।
নির্যাতিতদের দ্রুত সনাক্ত করা ও পর্যাপ্ত শারীরিক ও মানসিক চিকিৎসা দেয়া ও আইনের প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্যাতনকারী যাতে নির্যাতিতের কাছে যেতে না পারে তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নৃশংসতা প্রতিরোধ করা যায়। আসলে আমাদের করতে হবে অনেক কিছুই। আমরা অবশ্যই চাই নির্যাতিত ব্যক্তিকে সাহায্য করতে তার পাশে গিয়ে দাড়াতে কিন্তু তার চেয়েও ভালো হয় যদি আমরা সচেতনভাবে কোন নির্যাতনকারী তৈরি না করি। আর এজন্য প্রয়োজন নিজের এমন ধরণের আচরণ না করি যা দেখে অন্যদের মধ্যে নির্যাতনের অভ্যাস গড়ে উঠতে পারে।
* সহিংসতা ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যকে যেমন ব্যহত করে ঠিক তেমনি দৈনন্দিন জীবন-যাপনকেও ব্যাহত করে। সহিংসতার প্রভাব পারিবারিক পরিবেশের মধ্যেই শুধু সীমাবদ্ধ থাকে না, সামাজিক পরিম-লে ছড়িয়ে পড়ে।
* সহিংসতার লক্ষণসমূহ সনাক্ত করতে হবে এবং সনাক্তকরণের সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
* সবার প্রথম ও প্রধান কাজ হলো, নির্যাতিত ব্যক্তিকে সহায়তা করা বিশেষতঃ যে ব্যক্তি তার সমস্যা প্রকাশ করতে চায় না, তাকে আশ্বস্ত করতে হবে যে, নির্যাতনের জন্য তার কোনো দোষ ছিল না; নির্যাতনকারীই ঘটনার জন্য দায়ী।
* সংশ্লিষ্ট সেবাদানকারীগণ সমস্যা সমাধানের পদ্ধতিগত বিষয়গুলো খুঁজে বের করবেন এবং সে অনুযায়ী সেবা প্রদান করবেন।
* নিপীড়িত ব্যক্তির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ ও লিপিবদ্ধ করবেন। সামাজিক সহায়তা প্রদানকারী নেটওয়ার্কের সাথে যোগাযোগ ও সম্পর্ক স্থাপন করবেন।
* ঝুঁকিপূর্ণ ও চাপমূলক পরিস্থিতিতে কখনও সঠিক সেবা প্রদান ও গ্রহণের পরিবেশ নিশ্চিত হতে পারে না। তাই মানসিক স্বাস্থ্যকর্মীগণ অবশ্যই সহিংসতার নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন থাকবেন। এককভাবে নির্যাতিত ব্যক্তির সেবা প্রদান করতে গেলে সহিংসতার পরবর্তী প্রভাব সম্পর্কে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
* ব্যক্তিগত সুরক্ষা কৌশলগুলো সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা থাকা দরকার।
নৃশংসতার সংস্কৃতি চর্চা করে মানবিক সমাজের স্বপ্ন দেখা বড়ই দুঃখজনক। একটি সমাজ তখনই এগিয়ে যায় যখন দু’টি বিষয় সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে চর্চা হয়-বিশ্বাস ও সহমর্মিতা। একটি সমাজ বা রাষ্ট্রের সৌন্দর্য নির্ভর করে মানবিক ঔদার্যের ওপর। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই বিষয়গুলো উপেক্ষিত হওয়ার জন্য নৃশংসতার খড়গ বার বার হানা দেয় মানুষের বিশ্বাস ও আস্থার জায়গায়। এখানেই মানবতা, নৈতিকতা, মূল্যবোধ, ঔদার্য, মহানুভবতা, আদর্শ প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
মানুষের স্বাভাবিক সুকোমল বৃত্তিগুলো পরিষ্ফুটন হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ও সুস্থ পরিবেশ প্রয়োজন। আমাদের অনেকের বেড়ে ওঠাটা স্বাভাবিক ও সুস্থ নয় বিধায় দ্রুত নৃশংস আচরণ রপ্ত করা সহজ হয়। নিজের ভয় থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য, কখনো কখনো অন্যায় আচরণ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য; আবার পূর্বের অভিজ্ঞতা না থাকলেও বিভিন্নমুখী মেলামেশার জন্য মানুষ উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে। এ ধরণের আচরণ যদি দিন দিন রপ্ত করে তাহলে তার পক্ষে হঠাৎ আইন বা উপদেশ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। আমরা দেখেছি স্বামী বা স্ত্রীকে পরষ্পর খুন করেছে বা বাবা-মা সন্তানকে হত্যা করেছে অন্যায় আচরণ থেকে রেহাই পাওয়া জন্য; অথবা সন্তান তাদের কোন গোপন বিষয় দেখে ফেললে ভয় বা লজ্জা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সন্তানকে হত্যা করেছে।
আবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে তীব্র প্রতিযোগিতায় বেড়ে ওঠা মানুষ সহযোগিতা ও সহমর্মিতার পরিবর্তে ভোগবাদিতার মধ্যে বড় হয়। দায় নেওয়ার প্রবণতা তখন থেকে কমে যায়। দায় নেওয়াটা এড়িয়ে গেলে তখন নিজের অশুভ আচরণটা নিয়ন্ত্রণের ভার আর নিতে পারে না। এই দায় নেয়ার
সংষ্কৃতি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে, নিজেকে বাঁচাতে বা ধামাচাপা দিতে মানুষ নৃশংস আচরণ করে। এমন অবস্থা বা নৃশংসতা আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে, ঘরে-বাইরে, নাগরিক জীবনের অনেক ক্ষেত্রে ভীষণভাবে আতংক তৈরি করছে। দীর্ঘদিন অবলোকন করতে করতে, সইতে সইতে স্বল্পমাত্রার মানসিক সংকট একসময় মহীরুহ হয়ে গুরুতর মানসিক সংকটে পরিণত হয়ে যেতে পারে, এর জন্য সমাধান আমাদেরকে বের করতে হবে।
জীবনের প্রয়োজনে আমাদের নিত্য ছুটে চলা। প্রিয়জনের থেকেও প্রয়োজনের প্রাধান্যটাই যেন সবার আগে। তাতে জীবনের ঝুলিতে হয়তো যুক্ত হয় একসমুদ্র অভিজ্ঞতা, সাফল্য। তবে দিন শেষে শুধু প্রয়োজনের তাগিদে ছুটে চলা এসব মানুষের প্রিয়জনের সঙ্গে দূরত্বটাও তৈরি হচ্ছে এক আকাশের। এক জীবনে সব প্রয়োজন পূরণ সম্ভব নয়, তবে সেই এক সমুদ্র দূরত্ব অতিক্রম করে প্রিয়জনকে আর পাওয়া হয় না। বিনিময়ে বয়সের ভারে কুঁচকে যাওয়া চামড়াগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয় জীবনে ফেলে আসা কিছু হাহাকার জড়িত স্মৃতি। জীবনের কর্মব্যস্ততা একদিন ঠিকই ফুরায়, শুধু ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে প্রিয় মুখগুলোর কদর না করার আফসোসটাই আর ফুরায় না। শেষ বেলার অবসরের প্রার্থনাই তাই চোখের জলেই শেষ হয় হারানো প্রিয়জনের ভালো থাকার আকুতি।
সমাজ পরিসরে বিদ্যমান নীতিহীনতা, বিবেকশূণ্যতা ও চিন্তাজগতের আড়ষ্টতা আমাদের অজানা এক গন্তব্যের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। বিদ্যমান এ পরিস্থিতির প্রতিকার না হলে জাতি হিসেবে আমরা অন্তঃসারশূণ্য ও দেউলিয়া হয়ে পড়বো। ধরে নেয়া যায় সমাজ বা রাষ্ট্রের সিংহভাগ মানুষই চায় একটি শান্তিপূর্ণ, সুশৃঙ্খল, শোষণ-বৈষম্যহীন পরিবেশ-পরিস্থিতিতে বাস করতে। কিন্তু চাইলেই তো সেটা আপনা-আপনি আকাশ থেকে বর্ষিত হবে না। প্রত্যেককে যার যার অবস্থান থেকে চেষ্টা করতে হবে। সেজন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন মানসিকতার পরিমার্জন। আর এ পরিবর্তন মূলত নিজের মধ্যেই আনতে হবে; তারপর চেষ্টা করতে হবে পরিবার-পরিজন এবং নিজের আশ-পাশের লোকজনের মধ্যে এর বিস্তার ঘটানো। যে যেখানেই থাকুক ক্ষুদ্র নয় বরং বৃহত্তর স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সবাইকে দায়িত্ববোধ ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। এর মাধ্যমেই ধীরে ধীরে সমাজ-সভ্যতার প্রতি কমে আসবে নৃশংসতা এবং মানব স্বাস্থ্যের সংকটাপন্নতা দূরীভূত হবে।
লেখক: উপ-পুলিশ কমিশনার
(প্রফেশনাল স্ট্যান্ডার্ড এন্ড ইন্টারনাল ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন)
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ঢাকা।