গোপালগঞ্জের মধুমতি নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায় ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের আলোকবর্তিকা হাতে শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করে ১৯৯৬ সালে প্রথম, ২০০৮ সালে দ্বিতীয় এবং ২০১৪ সালে তৃতীয় এবং ২০১৮ সালে চতুর্থবারের মত নির্বাচনে জয়লাভ করে দলকে দেশের নেতৃত্বের আসনে বসাতে সক্ষম হন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ইতিহাস মূলতঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ইতিহাস। তাঁর নেতৃত্বে অর্থনীতির প্রতিটি সূচকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সন্ত্রাস ও জঙ্গি দমনেও তিনি বিশ্বনেতাদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতায় পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা মুসলিমদের আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে হয়েছেন প্রশংসিত। বাংলাদেশকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। এছাড়াও, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্থায়ী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, খাদ্যে স্বনির্ভরতা, নারীর ক্ষমতায়ন, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামীণ অবকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানী ও বিদ্যুৎ, বাণিজ্য, আইসিটি এবং এসএমই খাতে এসেছে ব্যাপক সাফল্য। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার, পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতিসহ জাতীয় জীবনের বহুক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন তিনি। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে করোনা মহামারিকে নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখা সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বকালে দেশে উন্নয়নের রীতিমত জোয়ার এসেছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলি টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প, রূপপুর পরমাণু প্রকল্প ইত্যাদি মেগাপ্রকল্পের পাশাপাশি বহু উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন হলে দেশ উন্নয়নের একটা বিশেষ উচ্চতা অতিক্রম করে যাবে। একইসঙ্গে মানুষের জীবনমানের প্রভূত উন্নতি হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণ ইতিহাসে তাঁকে অনন্য উচ্চতায় স্থাপন করেছে। এটা বলা বাহুল্য যে, করোনা মহামারির কারণে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে অর্থনীতি, জীবনযাত্রা, উৎপাদন ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য প্রভৃতি ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যাবতীয় উন্নয়ন ও উদ্দীপনামূলক কার্যক্রম শ্লথতার শিকার হয়েছে। সম্প্রতি ইউক্রেন-রুশ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের অর্থনীতি ঝুঁকির মুখে পড়েছে। এ অবস্থা উত্তরণে সরকার সর্বোতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে কৃচ্ছতার নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। জ্বালানী ও বিদ্যুৎখাতে সর্বোচ্চ সাশ্রয়ী নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে।
বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ দেশসমূহের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গভীর সম্পর্ক গড়ে ওঠার পাশাপাশি বিশ্বনেতা হিসেবেও তাঁর অনিবার্য স্বীকৃতি মিলেছে। দেশ-বিদেশে তাঁর যে প্রশংসনীয় ইমেজ গড়ে উঠেছে, তা আরও বিকশিত হোক, তিনি দীর্ঘজীবী হোন।