হোসনে আরা বেনু
আমার বাবার বাড়ি গোপালগঞ্জে। আব্বার সরকারি চাকরির কারণে ছোটবেলা থেকেই কুমিল্লা, রংপুর, যশোর, চট্টগ্রাম, বগুড়া, ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে বেড়িয়েছি। তাই বাস, ট্রেন লঞ্চ স্টিমার প্রায় সবধরনের যানবাহনের সাথেই পরিচিত ছিলাম। পাড়ি দিতে হয়েছে পদ্মা মেঘনা, যমুনা, শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী, মধুমতী, আড়িয়াল খাঁসহ বহু নদী আর সেই সঙ্গে বিভিন্ন ফেরি। আমি প্রথম ফেরি পার হই মেঘনা নদীতে।
সেবার আব্বা কুমিল্লা থেকে রংপুর বদলি হলেন।
তখন আমার দুই ভাই কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজে পড়তো। ভাইয়াদের যখন ছুটি হতো তাদের তিন হাউসের জন্য তিনটি গাড়ি বরাদ্দ থাকতো। কলেজ ইউনিফর্মে সেই গাড়িতে তারা বেশ সকালে কোটবাড়ি, ক্যান্টনমেন্ট হয়ে টিপরা বাজারের উপর দিয়ে মেঘনা ঘাটে এসে ফেরির জন্য ঘণ্টা দুয়েকের মতো অপেক্ষা করতো। ঘাটে দাঁড়িয়ে ১০ টাকার পরোটা-মাংস খেয়ে ফেরিতে উঠতো। একসময় ফেরিতে মিনিট চল্লিশ কাটিয়ে ওপার গিয়ে আবার ২০ মিনিট বাস জার্নি করে দাউদকান্দি ফেরি। সেখানেও দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরির দেখা মিলতো। তারপর কাঁচপুর ব্রিজ হয়ে ঢাকা। তখনকার সময়ে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গের গাড়িগুলো কেবল সন্ধ্যা ৬টা’তেই ছাড়তো। ভাইয়ারা এতোটাই ছোট ছিল যে ওনারা কোনো আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থাকার কথা চিন্তাও করতে পারতেন না। কিংবা বাসার জন্য বড্ড তাড়া ছিল। কখন ঘরে ফিরবে!
তাই সেদিনই গাবতলী হয়ে পৌঁছে যেতো আরিচা ফেরি ঘাটে। তারপর সাড়ে পাঁচ/ ছয় ঘণ্টার অসহ্য ফেরি যাত্রার সমাপ্তি ঘটতো পাবনার নগরবাড়ি ফেরিঘাটে এসে। আর রংপুর পৌঁছাতে পৌঁছাতে প্রায় সকাল হয়ে যেতো। আমরা ফজরের আযান দেওয়া মাত্রই বাইরে এসে দাঁড়িয়ে থাকতাম। তখন মোবাইল ফোনও ছিল না যে কেউ খোঁজ নিয়ে বর্তমান অবস্থাটা জেনে নেবে।
আম্মা খুব কষ্ট পেতেন ছেলেদের কেন একটা দিন আগে কাছে পেলেন না! প্রতিবেশীরাও দুঃখ প্রকাশ করতো আব্বার এতদূর বদলির জন্যে। সে সময় আব্বাকে আফসোস করতে দেখতাম যমুনা সেতুর জন্য। আমি রংপুরে অনেক পরিবারকে দেখেছি যথেষ্ট মেধাবী হওয়া সত্ত্বেও সন্তানদের তারা কিছুতেই পড়াশোনার জন্য রাজধানীতে পাঠাতে রাজি হতেন না, শুধু একটা ব্রিজের অভাবে।
রংপুর থেকে সরাসরি গোপালগঞ্জে কিংবা ঢাকা হয়ে গোপালগঞ্জ যেতেও আমাদের পদ্মাসহ আরো কয়েকবার ফেরি পরিবর্তন করতে হতো। ফেরি পারাপার অপেক্ষাকৃত ফেরির জন্য অপেক্ষার সময়টা ছিল দীর্ঘ। তখনও আব্বা আম্মার আফসোস পদ্মায় একটা সেতু নেই কেনো? সময় গড়িয়ে নদীর বুকে এক সময় যমুনা ব্রিজসহ আরও অনেক ব্রিজ তৈরি হলো। যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটলো। আমরাও বড় হলাম, বিয়ে হলো। শ্বশুরবাড়ি ফরিদপুর।
দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাইবোনেরা ছড়িয়ে পড়লাম। কিন্তু প্রমত্তা পদ্মায় তখনও কোনো সেতু তৈরি হলো না। কেউ ভাবেনি একটা সেতুর কথা। পদ্মা পার না হয়ে আমাদের গোপালগঞ্জ বা ফরিদপুরে পৌঁছানো সম্ভব হতো না। তাই ফেরি ছাড়াও আর উপায় ছিল না।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরি পার হয়ে রাজবাড়ী দিয়ে শ্বশুরবাড়ি গেলেও সময় বেশি লেগে যায়। আর মাওয়া হয়ে পদ্মা পার হলে ফেরি সময় বেশি নিলেও রাস্তার পরিধি কম হওয়ায় ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জ বা ফরিদপুরে আসা-যাওয়াটা বেশি সুবিধাজনক ছিল। তাই মাওয়া ঘাট ছিল আমাদের পছন্দনীয়।
ফেরির পল্টুন নামানো থেকে গাড়ি ওঠানামা সবই ভালো লাগতো। উঠতে উঠতে দোয়া করতাম যেন আমাদের গাড়িটা একদম ফেরির কিনার ঘেঁষে দাঁড়ায়। দুচোখ ভরে নদীর রূপসুধা পান করবো। ফেরিতে নেমেই উপরে চলে যেতাম। নদীর বুকে সূর্যের আলোর ঝলক মুগ্ধ করে। লবণ ঝাল দিয়ে ডিম সিদ্ধ, পেয়ারা মাখা, আমড়া মাখা, ঝালমুড়ি, একটু পরপর চা আর ইলিশ ভাজার সঙ্গে গরম ভাত…… জাস্ট অসাধারণ লাগতো। আর নদী তীরের মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবন দেখে বিভিন্ন গল্প নিয়ে বাড়ি ফিরতাম।
এরই মধ্যে গুনগুনিয়ে পদ্মাসেতু নির্মাণের গল্প শোনা যায়। কাজও শুরু হয়। ভীষণ আনন্দ হয়। অনেকেই আফসোস করতো দু’ঘণ্টা অহেতুক নষ্ট হওয়ার জন্য (এখানে দু থেকে তিন ঘণ্টা লাগে পদ্মা পার হতে)। আমারও খারাপ লাগতো, তবে অন্যদের মতো আফসোস ছিল না। কাজ যখন শুরু হয়েছে একদিন ঠিকই আমরাও সেতুর উপর দিয়ে আসাযাওয়া করবো।
আমি জার্নি করতে ভালোবাসি। কোনো ক্লান্তি নেই আমার। বাস ট্রেন যার উপরই চেপে বসি না কেন, জানালা দিয়ে সবুজ সুন্দর দেশটির অপার্থিব সৌন্দর্য দেখতে দেখতে সময় যে কীভাবে বয়ে যায়, বুঝতে পারি না। কিন্তু একদিন আমারও এই ভালো লাগার জায়গায় হাহাকার এসে ভিড় করলো পদ্মা সেতুর জন্য। সেদিন মনে হয়েছিল, আলাদীনের প্রদীপের সেই দৈত্যটা এসে যদি এখনই সেতুটি বাস চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দিত!
তখন করোনা মহামারি চলছে। দফায় দফায় কেবল লকডাউন পড়ছে। আবার করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে লকডাউন শিথিল করা হচ্ছে। ওই মুহূর্তে জরুরি প্রয়োজনে আমাদের গোপালগঞ্জ যেতে হয়েছিল। হঠাৎই একদিন শোনা গেল পরদিন ভোর ছয়টা থেকে আবার লকডাউন শুরু। পড়িমরি করে দুপুরের খাবার না খেয়ে সেগুলো বক্সে নিয়ে আমরা ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। টেকেরহাট এসে মাইক্রোবাস নষ্ট হয়ে যাওয়ায় একটা ওয়ার্কশপে যেতে হলো। সেখানে গাড়ি রেখে পাশেই ছোট্ট একটি চা’য়ের দোকানে চা খেতে যাওয়া মাত্রই শুরু হলো ধূলিঝড়। কী ভয়ানক সে ঝড়। তিন ঘণ্টা সেই দম বন্ধ পরিবেশে থেকে ঝড়ের দাপট একটু কমে এলে আবারও রওয়ানা হলাম। পথেই শুনতে পেলাম উত্তাল পদ্মায় নাকি আজ ফেরি চলবে না। লকডাউনের খবর পেয়ে আমাদের মতো সবাই ছুটছে, গন্তব্য কাঁঠালবাড়ী ফেরিঘাট। ফলে রাস্তায় যানজটের কারণে ফেরিঘাটে পৌঁছতে রাত ন’টা বেজে গেল। ফেরির জন্য অপেক্ষা আরো দু’ঘণ্টা। একটা ফেরি মিস হয়ে যাওয়ায় আরো তিন ঘণ্টা অপেক্ষা।
অপেক্ষার সময় কেবলই বাড়ছে…..
আমার হাজব্যান্ড সেদিন সাথে ছিল না। খাবারও শেষ হয়ে গিয়েছিল। পেছনের মাইক্রোতে একটা অসুস্থ মেয়েসহ তার মা ভীষণ কাঁদছিলো। বাবা শুধু অস্থির হয়ে পায়চারি করছিল। একজন সরকারি কর্মকর্তা হাউমাউ করে কাঁদছিলেন, তার স্ত্রী ও দু’মেয়ে পদ্মার চরে আটকা পড়েছে (লকডাউনের কথা শুনে স্পিড বোটে চড়ে তার স্ত্রী মেয়েদের নিয়ে ওই ভদ্রলোকের কাছে আসছিলেন ছুটি কাটাতে)।
আমি আমার দু মেয়ে, ভাগ্নি আর ছোট্ট দুবাচ্চাসহ ছোট বোন ছিলাম গাড়িতে। এত্তো অসহায় লাগছিল সেদিন! আমার মেয়েটা বলছিল, আমরা বাবার কাছে যেতে পারবো তো মা?
মানুষ পরিচয়টা ছাপিয়ে শুধু নিজেকে মেয়ে মনে হচ্ছিল সেদিন।
একমনে আল্লাহকে ডেকে যাচ্ছিলাম ‘উদ্ধার কর’। এতো ভয় কেনোদিনও মনে হয় পাইনি। অবশেষে তিনটার সময় ফেরি পেলাম। আর রাতের আঁধার কেটে যেতেই আবছা আলোয় দেখি চঞ্চলা অস্থির প্রমত্তা পদ্মার বুকে সগৌরবে দাঁড়িয়ে আছে সুন্দরী সাহসী পদ্মা-সেতু।
সাহসী’ই তো।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে ঋণ দিতে অস্বীকার করে প্রচন্ড অপমান করলো।
নানান সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম খরস্রোতা নদীতে নিজস্ব অর্থায়নে এমন একটি সেতু নির্মাণ করে বাংলাদেশ সেই অপমানের উপযুক্ত জবাব দিল। এ তো সত্যি বিশাল সাহসের ব্যাপার। সেতুর সামনে দাঁড়িয়ে মুচকি হাসি ………
আর, আমি কিনা ভয় পাচ্ছিলাম!
সেতু তো নয় এ যেন ছোট ছোট সুখ-দুঃখমাখা গল্প দিয়ে সাজানো আস্ত একটি উপন্যাস।
এ সেতুর সঙ্গে জড়িয়ে আছে এদেশের মানুষের ভালোবাসা আর আবেগ।
পদ্মা পারাপারের সময় যখন দেখতাম…… ওই যে আরো একটা স্প্যান বসানো হয়েছে, আরে আরে অনেকটা কাজই তো শেষ হয়েছে, আল্লাহ! এতো দোতলা সেতু! কি উচ্ছলতা কাজ করতো ভেতরে! অদ্ভুত এক শিহরণ খেলে যেতো মনে। সেতুর কাছাকাছি আসতেই যাত্রীরা সব্বাই আমরা সেলফি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়তাম। ভিডিও করেছি কত্তোবার! সেতুর দুপাশের এক্সপ্রেস ওয়েতে উঠেই অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখেছি….. এত্তো সুন্দর রাস্তাটা আমাদের!
মাঝেমাঝে পূর্ণিমা আলোয় লং ড্রাইভে চলে গেছি। ভীষণ রোমাঞ্চকর লাগতো।
ভিডিও করে প্রবাসী বন্ধুদের পাঠিয়ে আহ্লাদে আপ্লূত হয়ে বলতাম, দ্যাখো ভালো করে। আমাদেরও আছে।
বহু কাক্সিক্ষত, প্রত্যাশিত সেই সেতু উন্মুক্ত হতে চলেছে ২৫শে জুন, বঙ্গবন্ধুর আত্মমর্যাদাশীল জাতি গঠনের স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে।
দেশজুড়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু পদ্মা সেতু উদ্বোধন। এরই মধ্যে কিছুসংখ্যক লোক নেতিবাচক কথা বলছেন, ট্রল করছেন। আমি বুঝি না শুধু বিরোধিতা করতে হবে বলেই বিরোধিতা? এটুকু বুঝতে খুব বেশি মাথা খাটাতে হয় না যে একটা সেতু অর্থনৈতিকভাবে কিভাবে দেশকে সমৃদ্ধ করে। যারা নেতিবাচক কথা বলছেন তারা জানেন না কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল এই সেতু নির্মাণ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য। এ অঞ্চলের মানুষের বহুদিনের লালিত স্বপ্ন এ সেতু।
হাজব্যান্ড সরকারি চাকরিতে থাকায় দুটো ঈদের একটিতে ছুটি পায়। তাও ঈদের একদিন আগে। সেহরিরও আগে বাসা থেকে বের হতাম নির্বিঘ্নে ফেরিতে ওঠার জন্য। তারপরও সাত আট ঘণ্টা ফেরির জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। এখন আর সে কষ্ট হবে না। এপার ওপার দুপারের মানুষদের এক সূত্রে বেঁধেছে এ সেতু। যোগাযোগ সমস্যার কারণে এ অঞ্চলের পিছিয় পড়া জীবনযাত্রার মানের বিরাট পরিবর্তন আনবে এ সেতু। দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে মানুষের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। কোনো অসুস্থ মানুষকে ঢাকায় আনার পথে ফেরির অপেক্ষায় থেকে মৃত্যুবরণ করতে হবে না আর। কিছু মানুষ আছেন, আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে পরিবারকে কাছে রাখতে পারে না। আবার অনেকেই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে ঢাকায় পরিবার রেখে ওপাড়ে একা-একা কষ্ট করছেন। এই সেতুর কারণে তারা দিন শেষে পরিবারকে সময় দিতে পারবে। রাত পোহালেই সেই স্বপ্নকে আমরা ছুঁয়ে দেব,
সেই #স্বপ্নসেতুর উদ্বোধন করবেন # মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
সারাদেশে ঈদ ঈদ উৎসব চলছে। আমরাও লাচ্ছা সেমাই নিয়ে বসবো টিভির সামনে। দেখবো উদ্বোধন অনুষ্ঠান।
ভাবছেন, পাগলামি!
পাগলামি আর আবেগ যাই বলেন, একটা গল্প শোনাই। পদ্মা সেতু নির্মাণ শুরু হলে এক প্রেমিক-প্রেমিকা সিদ্ধান্ত নেয়, সেতু উদ্বোধনের দিন তারা বিয়ে করবেন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং ঐতিহাসিক এ দিনটিকে স্মরণীয় রাখতেই তাদের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া। সেই মোতাবেক ১০ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে তারা ২৫ শে জুন বিয়ে নামক পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছেন। হবু দম্পত্তির জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।
বাঙালি মাত্রই আবেগি।
আর এমনই এক আবেগের নাম পদ্মা সেতু।
একটা সফলতার নাম পদ্মা সেতু।
একটা সক্ষমতার নাম পদ্মা সেতু।
একটা জেদের নাম পদ্মা সেতু।
চরম স্পর্ধার নাম পদ্মা সেতু।
একটা অহঙ্কারের নাম পদ্মা সেতু।
একটা চ্যালেঞ্জের নাম পদ্মা সেতু।
আত্মসম্মানের নাম পদ্মা সেতু।
আত্মনির্ভরশীলতার প্রতীক পদ্মা সেতু।
সেতু যেন আমাদের ভাবাতে বাধ্য করেছে ‘আমরাও পারি’ না, আল্লাহ সহায় থাকলে আমরা অবশ্যই পারবো।
ধন্যবাদ গণতন্ত্রের মানসকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
ধন্যবাদ সেতু সংশ্লিষ্ট সব্বাইকে।
লেখক : সহধর্মিণী, এসপি, ঢাকা জেলা।