গভীর রাতে ঘুম ভেঙে তোমাকে খুঁজি
মাথার কাছে চুপচাপ বসে আছো, তোমাকে দেখি না।
তোমার পড়ার টেবিলে নিসঙ্গতা
বুকশেলফে সাজানো তোমার বই
কালো ফ্রেমের চশমা, লেখার খাতা
গীতবিতান, তোমার কার্ল মার্ক্স, টলস্টয়
চারদিকে শুনশান নীরবতা
কান পাতি নিস্তব্ধতায়
কারো পায়ের শব্দ শুনিনা
হঠাৎ আতঙ্কে কেঁপে ওঠে বুক
মনে পড়ে যায় ১৯৭১, ২৫ মার্চ,
নরপশুর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ,
মনে পড়ে স্বাধীনতার রক্তাক্ত অধ্যায়।
মনে পড়ে ১৯৭৫, আমার সব হারানোর ইতিহাস।
তবে তুমি যে বলো তুমি আছো
দেখ পিতা তোমার সন্তানেরা তোমার প্রতীক্ষায়
প্রহর গোনে দিন-রাত, আমিও
সবাই কত কি বলে মানে বুঝি না
কত দিবস জন্ম মৃত্যু, উদযাপন, উদ্ভাবন, সম্মান, অর্জন
আমার যে মন ভরে না
ছায়ার মতো তোমার স্মৃতি হাতড়ে বেড়াই
এই আমার বেঁচে থাকা
আমার বেদনা আমার উৎসব!
আর কতকাল এভাবে বেঁচে থাকবো
তোমার সোনার বাংলা
আর কত দু’হাতে আগলে রাখব?
ফিরে আস তুমি বাবা, ফিরে আস
দেখ বঙ্গবন্ধু সেতু, মেট্রোরেল,
কত রাস্তা কত গলি, কত মেঠো পথ
জানো তো বাবা আমাকে কেউ হাঁটতে দেয় না
আমার খুব ইচ্ছে করে তোমার হাত ধরে হাঁটতে
তোমার কোলে মাথা রেখে স্বাধীনতার গান শুনতে . . .
তুমি এসেছো বাবা!
তোমাকে দেখতে পাইনা কেন?
তুমি যে ডাকলে আমায় হাসু হাসু বলে
তুমি কি আসবে না
তুমি কি কথা রাখবে না!!
জয়িতা শিল্পী
পুলিশ সুপার